যুব বিশ্বকাপজয়ী ওপেনার তানজিদ তামিম এবার প্রথমবারের মতো ডাক পেয়েছেন জাতীয় দলে। যাকে দেখে ছোটবেলা থেকে অনুপ্রেরিত, সেই তামিম ইকবালের জায়গায়ই ডাক পেয়েছেন স্বপ্নের লাল-সবুজ জার্সি পড়ে নেওয়ার।
যুব বিশ্বকাপে দারুণ পারফর্ম করা তামিম, ব্যাচের অন্য সবার মতো বিসিবির রাডারে ছিলেন শুরু থেকেই। তবু তিনি ভাগ্যকে কিছুটা দোষারোপ করতেই পারেন! ব্যাচের অন্য অনেকে জাতীয় দলে জায়গা পাকাপোক্ত করলেও সুযোগ হচ্ছিল নাহ তামিমের। তবে নিজের জায়গা থেকে পারফর্ম করে গেছেন তিনি। সদ্য সমাপ্ত ইমার্জিং এশিয়া কাপেও নজর কেড়েছেন সবার।
শ্রীলঙ্কা ‘এ’ দলের বিপক্ষে ৩৯ বলে ৫১, ওমানের বিপক্ষে ৪৯ বলে ৬৮ এবং ভারতের বিপক্ষে ৫৬ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলেন তামিম।
ইমার্জিং এশিয়া কাপে দারুণ পারফরম্যান্সের পর তাই তামিমের জায়গায় সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পেয়েছেন তিনি। ইনজুরিতে তামিম এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে গেলে নির্বাচকরা কালবিলম্ব না করে তামিম ইকবালের জায়গায় ডেকে নেন তানজিদ তামিমকে।
তামিমের জায়গায় ডাক পাওয়া নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তানজিদ তামিম বলেন, “তামিম ভাইয়ের যে কথাটা বললেন উনি সবার জন্য আইডল। ওনাকে দেখে বড় হয়েছি আমি। তো চেস্টা করবো নিজের সেরাটা দেওয়ার, জায়গাটা ধরে রাখার।
সত্যি কথা বলত, খেলা দেখার ইন্সপায়ারেশন পেয়েছি যেহেতু ওনার নামের মিল ছিল। এইজন্য ছোট থেকেই ওনার খেলা বেশি দেখা হইছে। উনি আমাদের জন্য আইডল। ওনার খেলা দেখে অনেক কিছু শেখার চেস্টা করি। ”
এছাড়াও তামিমের জায়গায় খেলাটা প্রেশার কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন ” প্রফোশনাল ক্রিকেট খেলি, এটা প্রেশারের খেলা। খেলায় অনেক ধরনের সিচুয়েশন থাকে, জিনিসটা যত তাড়াতাড়ি হ্যান্ডেল করতে শিখব তত তাড়াতাড়ি আমরা বেটার ক্রিকেট খেলতে পারবো”
পরিশ্রম যে সাফল্যের চাবিকাঠি তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তানজিদ তামিম। বিকেএসপি থেকে পড়ালেখা না করলেও উপজেলা-জেলা পর্যায়ের ক্রিকেট থেকে পরিশ্রম করে পারফর্মের মাধ্যমে উঠে এসেছেন দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। তাই নিজের শেকড় এর কথা বলতে ভুলেননি তামিম।
এনিয়ে তামিম বলেন, “আমাদের উঠে আসাটা এতো সহজ ছিল না। কারণ আমাদের ব্যাকগ্রাউন্ডটা বিকেএসপির ছিল না। আমরা অনেক ডিস্ট্রিক্ট, ডিভিশন, ঢাকা লিগ খেলে এই জায়গায় উঠে আসতে হয়েছে । তো আলহামদুল্লিলাহ বগুড়ায় আরও অনেক ট্যালেন্টেড প্লেয়ার আছে, ইনশাল্লাহ তারাও উঠে আসবে।”
পরিশ্রম যার সাফল্যের মন্ত্র তার লক্ষ্য যে বড় কিছু তা কল্পনা করে নিতে খুব বেশি কষ্ট হয় নাহ। তাই তামিমের স্বপ্ন ও দেশের হয়ে বড় কিছু জয়ের। আর তামিমের মত যারা একবার বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেয়েছেন তাদের বিশ্বকাপ বিনে অন্য ট্রফি জিতে মন ভরার কথা নয়।
নিজের স্বপ্ন নিয়ে তামিম বলেন, “আমরা যেটা অ্যাচিভ করছি সেটা তো পাস্ট এখন। সবার মধ্যে একটাই কথা হয় একটা স্বপ্ন যে বড়দের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা। সবারই যখন দেখা হয়, সামনে যেহেতু ওয়ার্ল্ড কাপ একটা জিনিসই মাথায় কাজ করে, আমরা এশিয়া কাপ যত টুর্নামেন্টই খেলি ব্যাক অব দ্য মাইন্ডে কিন্তু ওয়ার্ল্ড কাপ থেকেই যায়, তো ইনশা আল্লাহ চেষ্টা করব এবার। যদি কপালে থাকে ইনশাল্লাহ হয়ে যাবে।”
নাঈম আনামুলদের আসা যাওয়ার মিছিলে তাই এবার ‘পরিশ্রম’ মন্ত্রে মন্ত্রমুগ্ধ তানজিদ তামিমে ভরসা গোটা দেশের।